Header Ads

বিতর্কিত তিন জাতীয় নির্বাচনের তদন্তে কমিটি গঠন করল সরকার

    
        

বিতর্কিত তিন জাতীয় নির্বাচনের তদন্তে কমিটি গঠন করল সরকার

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন—২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচন—সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দেওয়ার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে এই কমিটিকে।

এই পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির সভাপতি করা হয়েছে হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি শামীম হাসনাইনকে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব শামীম আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক, আইনজীবী তাজরিয়ান আকরাম হোসাইন এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞ মো. আব্দুল আলীম।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। কমিটিকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। প্রয়োজনে কমিটি আরও সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলো দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপকভাবে বিতর্কিত হয়েছে। এসব নির্বাচনে ভোটাধিকার হরণ করে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এতে করে সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনার প্রক্রিয়া লঙ্ঘিত হয়েছে এবং আইনের শাসন, গণতন্ত্র ও মৌলিক মানবাধিকার বিপন্ন হয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।

এই প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, দেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে এবং ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এসব নির্বাচনকে ঘিরে যেসব দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটেছে, তার নিরপেক্ষ তদন্ত করা প্রয়োজন।

কমিটির কার্যপরিধি

কমিটি নিম্নোক্ত বিষয়গুলো তদন্ত ও বিশ্লেষণ করবে:

  • ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা, নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যমে উত্থাপিত প্রতিবেদন ও অভিযোগ বিশ্লেষণ।

  • নির্বাচনী অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণ।

  • নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ সীমিত করা এবং ভোটাধিকার বাধাগ্রস্ত করার পেছনে তৎকালীন সরকার, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা বিশ্লেষণ।

  • তৎকালীন নির্বাচন কমিশন, সচিবালয় ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা বিশ্লেষণ।

  • তৎকালীন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগ যাচাই।

  • নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অনিয়মের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ।

  • ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে নির্বাচন কমিশনের কাঠামো, আইন, বিধি-বিধান, প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় রূপরেখা ও সুপারিশ প্রণয়ন।

এই তদন্ত কমিটির কার্যক্রম ও সুপারিশ দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.