বিশ্ববাসীকে পরিষ্কার বার্তা দিতে হবে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা অত্যন্ত গুরুতর এবং বিশ্ববাসীর সামনে এ বার্তাটি পরিষ্কারভাবে তুলে ধরতে হবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটে সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী বাংলাদেশ। এই সংকট সমাধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়।
বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, প্রতি বছর ২০ জুন জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব শরণার্থী দিবস পালিত হয়। এটি বিশ্বব্যাপী শরণার্থীদের সম্মান জানানো ও তাদের দুঃসহ অবস্থার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সচেতনতা তৈরির দিন। এ বছরও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে এ দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে জাতিগত সহিংসতা ও রাজনৈতিক নিপীড়নের কারণে বাস্তুচ্যুতির ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এ পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ ও অমানবিক।
বিএনপির পক্ষ থেকে এ দিবসের প্রতি পূর্ণ সংহতি জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব মানুষ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছেন, তাদের স্বদেশে মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবর্তনের আন্তর্জাতিক প্রয়াসে দলটি সক্রিয় সমর্থন জানিয়ে আসছে এবং তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
তারেক রহমান আরও বলেন, শরণার্থী দিবসের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, যেসব মানুষ সংঘাত, নিপীড়ন ও নির্যাতনের কারণে নিজ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে, তাদের সাহস, সংগ্রাম এবং জীবন গড়ার প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেওয়া। বাংলাদেশের ইতিহাসেও রয়েছে এমন অভিজ্ঞতা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় লাখো মানুষ শরণার্থী হিসেবে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির, যেখানে প্রায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গা দীর্ঘ আট বছর ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তারা মিয়ানমারে দমন-পীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই সংকট এখন বিশ্বের অন্যতম বড় মানবিক বিপর্যয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের জনগণ মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন সময় এসেছে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের। এজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সক্রিয় কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের বর্তমান দুর্দশা, বাংলাদেশের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও কীভাবে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি, মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুতির নীতি, এবং বারবার প্রত্যাবাসনের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ—এই বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক মহলের সামনে স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে হবে। এতে বিশ্ববাসীর মধ্যে বাস্তব চিত্রটি প্রতিফলিত হবে এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে আমি বাংলাদেশ সরকার, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং বিভিন্ন দাতা সংস্থার সহযোগিতা কামনা করছি। একইসঙ্গে বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে আমি বিশ্বের সব শরণার্থীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি এবং তাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের জন্য জোরালো আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার আহ্বান জানাচ্ছি।
দিবসটি উপলক্ষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও একটি পৃথক বাণী দিয়েছেন।
No comments