চীন-ভারত-রাশিয়া: আবারও কি ঘনিষ্ঠ হচ্ছে?

 

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ সম্প্রতি চীন, ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা আবার শুরু করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এখন সময় এসেছে এই ত্রয়ীর কার্যক্রম পুনরায় চালু করার। এ তথ্য জানায় এনডিটিভি।

রাশিয়ার পারম শহরে ইউরোপ ও এশিয়ার সংযোগস্থলে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় লাভরভ এই মন্তব্য করেন। সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইউরেশিয়া অঞ্চলে যৌথ নিরাপত্তা ও সহযোগিতার একটি ন্যায্য কাঠামো গড়ে তোলা।

লাভরভ বলেন, রাশিয়া-ভারত-চীন (RIC) ত্রিপাক্ষিক ফোরামটি বহু বছর আগে প্রাক্তন রুশ প্রধানমন্ত্রী ইয়েভগেনি প্রিমাকভের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই ফোরামের অধীনে ২০ বারেরও বেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। শুধু তাই নয়, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং আর্থিক বিভিন্ন সংস্থার মধ্যেও পারস্পরিক আলোচনা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। এই অবস্থায় এই ত্রিপাক্ষিক ফোরামটি আবার সচল করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

এ সময় লাভরভ পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর ভূমিকাকে ঘিরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ন্যাটো খোলাখুলিভাবে ভারতকে চীনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে জড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে তিনি আশাবাদী যে ভারত এই কৌশল স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছে এবং গোপন আলোচনার মাধ্যমেই সে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ২০২০ সালের জুন মাসে গালওয়ান উপত্যকায় চীন-ভারত সংঘর্ষের পর এই ত্রিপাক্ষিক বৈঠক বন্ধ হয়ে যায়। তবে ২০২৪ সালের অক্টোবরে রাশিয়ার কাজানে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে সরাসরি বৈঠক হয়। এই বৈঠক দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষকরা প্রশ্ন তুলছেন—আবারও কি একাট্টা হচ্ছে চীন, ভারত ও রাশিয়া? এই ত্রয়ী যদি পুরনো সহযোগিতা পুনরুজ্জীবিত করে, তবে বৈশ্বিক কূটনৈতিক ভারসাম্যে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে।