ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’: কোথায় কোথায় হবে ভারি বৃষ্টি?

 

গত কয়েকদিন ধরে দেশের নানা প্রান্তে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যা পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় টানা তিনদিন ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ।

রোববার (২৫ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই তথ্য জানান।

কী বলছেন গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ?

তিনি জানান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আমেরিকার আবহাওয়ার পূর্বাভাস মডেল অনুযায়ী, আগামী ২৭ বা ২৮ মে (মঙ্গলবার বা বুধবার) উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে একটি লঘুচাপ বা নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি ব্যাখ্যা করেন,

• যদি বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৬৩ কিলোমিটারের বেশি হয়, তবে সেটিকে ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ধরা হবে।

• ঘণ্টায় ৩১ কিমি’র কম হলে সেটি লঘুচাপ।

• ৩১-৫০ কিমি/ঘণ্টা হলে সেটি নিম্নচাপ।

• আর যদি ৫১-৬২ কিমি/ঘণ্টা হয়, তবে সেটিকে গভীর নিম্নচাপ বলা হবে।

কোথায় হবে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি?

তিনি আরও বলেন, আগামী ২৯, ৩০ ও ৩১ মে (বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার) সম্ভাব্য লঘুচাপ বা নিম্নচাপের প্রভাবে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হতে পারে। এমনকি এই সময় বাংলাদেশ এবং ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে ৫০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছেন তিনি।

কোন এলাকায় বৃষ্টি হবে সবচেয়ে বেশি?

বৃষ্টির পরিমাণ মূলত নির্ভর করবে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশে কোথা দিয়ে প্রবেশ করছে এবং কতটা ধীরে অতিক্রম করছে তার ওপর।

• যদি এটি খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে প্রবেশ করে, তাহলে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে।

• আর যদি বরিশাল বা চট্টগ্রাম বিভাগের উপর দিয়ে প্রবেশ করে, তাহলে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস

এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমীবায়ু ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে এবং এটি আরও বিস্তৃত হওয়ার অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। অধিদপ্তরের মতে, আগামী ২৭ মে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘শক্তি’

প্রসঙ্গত, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির নাম হতে পারে ‘শক্তি’, যা নামকরণ করেছে শ্রীলঙ্কা।

সতর্কতার অংশ হিসেবে উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারীদের উচিত আবহাওয়ার সর্বশেষ আপডেটের দিকে নজর রাখা এবং স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলা।