Header Ads

ট্রাম্পের সঙ্গে সমঝোতায় ইরানের প্রস্তুতি

 

ট্রাম্পের সঙ্গে সমঝোতায় ইরানের প্রস্তুতি


পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আপসের ইঙ্গিত দিয়েছে ইরান। তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইস্যুতে কোনো ছাড় দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে দেশটি।

সোমবার (২৬ মে) সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাঘায়ি বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য থাকে—ইরান যেন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করে, তাহলে সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব। তবে ইরান তার শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির অধিকার থেকে একচুলও সরে আসবে না।

তিনি আরও জানান, আপসের অনেক পথ আছে, তবে কোনো নির্দিষ্ট দিক তুলে ধরেননি। বাঘায়ি বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র চায় ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির অধিকার কেড়ে নিতে, তাহলে সেটি হবে ভয়াবহ ভুল। এতে পুরো আলোচনা প্রক্রিয়া বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

সম্প্রতি রোমে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পঞ্চম দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে বলে তিনি আশাবাদী। “গতকাল ও আজ ইরানের সঙ্গে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। দেখি কী হয়। তবে আমি মনে করি, ইরান ইস্যুতে ভালো কিছু ঘটতে পারে,”—বলেন তিনি।

ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এই দফার আলোচনাকে ‘সবচেয়ে পেশাদার’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে সতর্ক করে বলেছেন, মূল বিষয়গুলো এতটাই জটিল যে, মাত্র দুই-তিনটি বৈঠকে সমাধান সম্ভব নয়।

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধে ট্রাম্প প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকলেও বাঘায়ি জানান, আলোচনায় মার্কিন প্রতিনিধিদের মাঝে কিছু নমনীয়তা দেখা যাচ্ছে। তার ভাষায়, “যেহেতু আমরা এখনও আলোচনায় বসছি, এর মানে যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে পেরেছে, ইরান কখনোই শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির অধিকার ছাড়বে না।”

জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি গত মার্চে জানান, তিন মাসে ইরানের ইউরেনিয়াম মজুত ৫০ শতাংশ বেড়েছে। তিনি বলেন, ইরানই একমাত্র অ-পরমাণু অস্ত্রধারী দেশ, যারা এ স্তরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা উদ্বেগজনক।

তবে আলোচনার আশাও এখনো টিকে আছে। যদিও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি সরাসরি আলোচনার পক্ষে নন, তবে তিনি পরোক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে কটাক্ষ করে বলেন, “বোকামির কথা না বলাই ভালো।”

মুখপাত্র বাঘায়ি এই প্রেক্ষাপটে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ‘উইন-উইন’ সমঝোতা সম্ভব। যদি সত্যিকারের ইচ্ছা থাকে, তাহলে পথও থাকবে। শুধু একটি নয়, অনেক পথ রয়েছে।”

এদিকে, সিএনএনের বরাতে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এমন গোয়েন্দা তথ্য এসেছে, যা বলছে—ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমনকি তখনও যখন ট্রাম্প প্রশাসন কূটনৈতিক সমঝোতার পথ অনুসরণ করছে।

এই বিষয়ে বাঘায়ি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “ইরান কোনো ধরনের চাপ সহ্য করবে না। যদি হুমকি দেওয়া হয়, তাহলে পুরো জাতি এক কণ্ঠে জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

No comments

Powered by Blogger.