ইসরায়েল বড় ধাক্কা খেল যুক্তরাজ্য থেকে

 

গাজায় চলমান সহিংসতা ও মানবিক সংকটের জেরে বড় ধাক্কা খেল ইসরায়েল। মঙ্গলবার (২১ মে) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের সঙ্গে নতুন করে আর কোনো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরু করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান, বোমা হামলা এবং নতুন স্থল অভিযানে বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া ত্রাণ প্রবেশে বাধার কারণে দুর্ভিক্ষও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এসব পরিস্থিতিকে কারণ দেখিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামি পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, যুক্তরাজ্য অধিকৃত পশ্চিম তীরের অবৈধ ইসরায়েলি বসতিগুলোর ওপর অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। এ ছাড়া, ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত সিপি হোটোভেলিকে তলব করা হয়েছে।

এই ঘোষণার একদিন আগেই যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা যৌথভাবে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ পরিচালনা ও পশ্চিম তীরে চালানো অভিযান নিয়ে সমালোচনা করে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, “গাজায় শিশুদের দুর্ভোগ এখন সম্পূর্ণ অসহনীয়” এবং তিনি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।

ডেভিড ল্যামি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এ সহিংসতার চক্র ভাঙার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তিনি জানান, যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যে তিনজন ব্যক্তি, দুটি অবৈধ বসতি কেন্দ্র এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দেওয়া দুটি সংগঠনের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

ল্যামি স্পষ্ট করে বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে বর্তমানে যেসব বাণিজ্য চুক্তি চালু রয়েছে, তা বহাল থাকবে। তবে নতুন কোনো আলোচনা শুরু হবে না, কারণ গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েল সরকারের ‘নিন্দনীয় নীতিমালা’ চলমান রয়েছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েল সরকারের উচিত আক্রমণাত্মক কার্যক্রম বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। এসব কর্মকাণ্ড শুধু মানবিক বিপর্যয়ই বাড়াচ্ছে না, বরং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাও মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলছে।

ইসরায়েল দ্রুত এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, যুক্তরাজ্য সরকার এমনিতেই আলোচনায় অগ্রগতি আনছিল না। তারা এই সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক ও দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে।

এই পদক্ষেপ ব্রিটেনের নীতিগত অবস্থানকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে—গাজায় সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহিতা জরুরি।