Header Ads

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমালোচনার মুখে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী

 

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমালোচনার মুখে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী


পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ভারতকে নিতে হলেও, এর জেরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী। দেশের একাংশের অসহিষ্ণু মনোভাব ফের প্রকাশ্যে এল—এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা। এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর থেকেই মিশ্রীকে সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষের শিকার হতে হচ্ছে।

কঠোর ভাষায় আক্রমণ

মিশ্রিকে ‘দেশদ্রোহী’, ‘প্রতারক’, এমনকি ‘বেইমান’ বলেও আক্রমণ করা হয়েছে। তার ব্যক্তিগত জীবনেও হানা দিয়েছে ট্রোলাররা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার মেয়েকেও টার্গেট করে অশালীন মন্তব্য করা হয়েছে। কারণ, তিনি আগে রোহিঙ্গাদের পক্ষে কিছু মন্তব্য করেছিলেন। ক্রমবর্ধমান এই বিদ্বেষের জেরে মিশ্রী তার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন।

কারা এই আক্রমণের পিছনে?

এই ট্রোলিংয়ের মূল হোতা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে দক্ষিণপন্থী একটি গোষ্ঠীকে, যারা দীর্ঘদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় চরম অবস্থান নেয়। তবে মিশ্রির পাশে দাঁড়িয়েছেন দেশের বেশ কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি। কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ, সাংসদ শশী থারুর, মিম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি, সাংবাদিক বীর সাংভি, ফ্যাক্টচেকার মহম্মদ জুবেইর ও অবসরপ্রাপ্ত আমলারা তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

সংঘর্ষের পটভূমি

গত মাসে পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর ভারত পাকিস্তানে পাল্টা হামলা চালায়। এরপর পাকিস্তানও জবাব দেয়। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেন পররাষ্ট্র সচিব মিশ্রী। তার সঙ্গে ছিলেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। যুদ্ধবিরতির পিছনে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো মধ্যস্থতা ছিল কি না, সে প্রশ্নে মিশ্রী নিরুত্তর ছিলেন।

রাজনৈতিক সমীকরণ ও বিভাজনের চেষ্টা

বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষিণপন্থীরা চেয়েছিল এই উত্তেজনাকে কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও তিক্ত করে তুলতে। সেই পরিকল্পনায় পানি ঢেলে দেয় যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত। ফলে বিক্রম মিশ্রীকে নিশানা করা হয়। অনেকেই বলছেন, মোদী সরকার পররাষ্ট্র সচিবকে বলির পাঁঠা বানিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।

সামরিক পর্যায়ে আলোচনা

এদিকে, যুদ্ধবিরতির পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ডিজিএমও পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। সোমবার বিকালে ভারতের ডিজিএমও রাজীব ঘাই এবং পাকিস্তানের ডিজিএমও কাশিফ আবদুল্লার মধ্যে আলোচনা হয়। সংঘর্ষবিরতির নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেও, বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি।

প্রথমে দুপুর সাড়ে ১২টায় এই বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে বিকাল সাড়ে ৫টায় শুরু হয়। এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজের বাসভবনে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা।

সূত্র: ডন, পিটিআই


No comments

Powered by Blogger.