বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) যেকোনো দায়িত্ব নিতে তিনি প্রস্তুত। তবে এখন পর্যন্ত তাকে নির্দিষ্টভাবে বোর্ড সভাপতির দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। আজ সকালে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে আমিনুল এসব কথা বলেন।
আমিনুল জানান, ১০-১৫ দিন আগে সরকারের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাকে জানানো হয়, বাংলাদেশের ক্রিকেটে কোনো একটি ভূমিকায় তাকে প্রয়োজন, বিশেষ করে সাময়িক সময়ের জন্য। আমিনুলও সে প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন।
গতকাল রাতে বর্তমান বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন। সেখানেই ফারুককে জানানো হয়, সরকার বিসিবির শীর্ষ পদে পরিবর্তন আনতে চায়। ফারুক আহমেদ দুই-এক দিনের মধ্যে পদত্যাগ করবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানা গেছে।
তবে ফারুক আহমেদ যদি স্বেচ্ছায় সরে না দাঁড়ান, তাহলে সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। কারণ, আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ক্রিকেট বোর্ডে সরকারের হস্তক্ষেপ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
এই প্রেক্ষাপটে ধারণা করা হচ্ছে, সরকার এক প্রকার কৌশল অবলম্বন করে বিসিবির নেতৃত্বে পরিবর্তন আনবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আমিনুল ইসলামকে প্রথমে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (NSC) প্রতিনিধি হিসেবে বিসিবির পরিচালক করা হবে। এরপর পরিচালকদের ভোটে তাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হবে। তবে এই দায়িত্ব তিনি পালন করবেন আগামী অক্টোবর মাসে বিসিবি নির্বাচন পর্যন্তই। নির্বাচন শেষ হলে তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন এবং পরবর্তী বোর্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না।
একসময় গুঞ্জন উঠেছিল, আমিনুলকে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) করা হতে পারে। তবে আমিনুল সরাসরি সেই সম্ভাবনাকে অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই খবরটি ভিত্তিহীন। সিইও হওয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, এমনকি আর্থিক দিক নিয়েও কিছু বলা হয়নি।’
বর্তমানে আমিনুল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) এশিয়া অঞ্চলের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে তিনি আইসিসির হাই পারফরম্যান্স কার্যক্রম এবং প্রশিক্ষণ ও শিক্ষাবিষয়ক কার্যক্রমের প্রধান হিসেবেও কাজ করছেন।
আগামী মাসে আইসিসির সঙ্গে তার বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও, তিনি জানান, তার এক বছরের জন্য নতুন চুক্তির বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে।
সবমিলিয়ে বোঝা যাচ্ছে, বিসিবির সাময়িক দায়িত্বে আসতে পারেন আমিনুল ইসলাম। দীর্ঘমেয়াদি নয়, বরং একটি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্যই তাকে বোর্ডের শীর্ষ পদে আনা হতে পারে। দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার অভিজ্ঞতা এবং গ্রহণযোগ্যতা ক্রিকেট বোর্ডের এই সংকটময় মুহূর্তে কাজে লাগাতে চায় সরকার।
No comments