একক প্রার্থী দিতে চায় পাঁচ ইসলামপন্থী দল, জামায়াত সিদ্ধান্ত নেবে পরে
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে ইসলামপন্থী দলগুলোর সাম্প্রতিক একতা। আগামী জাতীয় নির্বাচনে একক প্রার্থী দিয়ে ভোটে অংশ নিতে একমত হয়েছে পাঁচটি ইসলামি রাজনৈতিক দল। এদের নেতৃত্বে আছেন চরমোনাইয়ের পীর ও ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
এই পাঁচ দল হলো:
-
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
-
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
-
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম
-
নেজামে ইসলাম পার্টি
-
খেলাফত মজলিস
তারা ‘এক বাক্সে ভোট’ নীতিতে একমত হয়েছেন। অর্থাৎ, বিভক্ত না থেকে একক প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করতে চান। এতে ইসলামি ভোট এক জায়গায় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জামায়াত এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি
চরমোনাইয়ের পীরের ডাকে একাধিক বৈঠক হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর আমিরও এমন ঐক্যে আগ্রহ দেখিয়েছেন। তবে দলটি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।
৩৫ বছর পর ইসলামপন্থীদের একতা
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রায় ৩৫ বছর পর আবার ইসলামপন্থী দলগুলো একসঙ্গে বসেছে। এর আগে ১৯৯০ সালে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ‘ইসলামী ঐক্যজোট’ নামে এমন একটি জোট গঠিত হয়েছিল।
তবে এবার ‘সমমনা ইসলামি দল’ নামে একটি জোটের চারটি দল আলোচনায় অংশ নিলেও, ওই জোটের বাকি দুই সদস্য—বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (একাংশ) এবং বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন—বৈঠকে ছিল না। খেলাফত আন্দোলন ২০২৪ সালের নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেওয়ায় তাদের ডাকা হয়নি। অন্যদিকে, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ বর্তমানে নিষ্ক্রিয়।
নির্বাচনী প্রস্তুতি ও লিয়াজোঁ কমিটি
পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আসনভিত্তিক একক প্রার্থী, সংস্কার কমিশনের বিতর্কিত সুপারিশ, এবং রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। পাঁচ দলের প্রতিনিধি নিয়ে ১০ সদস্যের একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবি
চরমোনাইয়ের পীর বলেছেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো ‘সম্পূর্ণ বাতিল’ করতে হবে। তা না হলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবেন। তিনি আরও বলেন, দেশের টাকা পাচার, দুর্নীতি, এবং খুনিদের বিচার নিয়ে দলগুলো একমত হয়েছে।
অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা
শুধু ইসলামি দল নয়, গণ অধিকার পরিষদসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা চলছে। ইসলামি আন্দোলন চেষ্টা করছে, আরও কিছু ছোট দলকে এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতে।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, ‘আমরা পাঁচটি দল মিলে একসঙ্গে চলার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছি। সামনে আমরা আবার বসব, যার যার দাবি নিয়ে।’
চরমোনাইয়ের পীর বলেন, ‘আমরা এখন ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে চাই। প্রয়োজনীয় সংস্কার হলে নির্বাচনের আয়োজন যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই হওয়া উচিত।’
No comments