গাজার বিক্ষোভ: হামাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
ইসরায়েলের গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর এবার প্রথমবারের মতো হামাসবিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে হামাসের পদত্যাগ দাবি করে প্রতিবাদ জানায়।
মাস্ক পরা হামাস যোদ্ধারা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে হস্তক্ষেপ করে। তাদের হাতে অস্ত্র এবং লাঠি ছিল, এবং তারা বেশ কিছু বিক্ষোভকারীর ওপর হামলা চালায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে দেখা যায়, গাজার উত্তরাঞ্চলীয় বিত লাহিয়ায় তরুণরা রাস্তায় নেমে এসে হামাসের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। স্লোগানগুলো ছিল, “চলে যাও”, “চলে যাও”, “হামাস চলে যাও”।
হামাসপন্থী গ্রুপ বিক্ষোভের গুরুত্ব নাকচ করেছে। তারা বিক্ষোভকারীদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তবে হামাসের পক্ষ থেকে এই বিক্ষোভ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
ইসলামিক জিহাদের যোদ্ধারা ইসরায়েলে রকেট হামলা চালানোর এক দিন পর গাজায় এই বিক্ষোভ শুরু হয়। হামলার পর ইসরায়েলি বাহিনী বিত লাহিয়ার বাসিন্দাদের নিরাপদে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়, যা স্থানীয় মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
সম্প্রতি ইসরায়েলের নৃশংস হামলা ফের শুরু হয়েছে, যা যুদ্ধবিরতির পরবর্তী উত্তেজনার কারণ বলে অভিযোগ উঠেছে। হামাস দাবি করেছে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করেছে, এবং চুক্তির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
১৮ মার্চ গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর কয়েক শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছে।
বিত লাহিয়ার এক বাসিন্দা মোহাম্মদ দিয়াব বলেন, ইসরায়েলের হামলায় তার বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে, এবং এক বছর আগে বিমান হামলায় ভাইকেও হারিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমরা কারও জন্য মরতে চাই না, আমরা হামাস বা অন্য কোনো পক্ষের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাই না।"
তিনি আরও বলেন, "হামাসকে অবশ্যই ক্ষমতা ছাড়তে হবে এবং তাদের দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের কথা শুনতে হবে।"
বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন, “হামাসের শাসন নিপাত যাক, মুসলিম ব্রাদারহুডের শাসন নিপাত যাক।”
২০০৭ সাল থেকে গাজায় হামাস এককভাবে শাসন করছে, যখন তারা ফাতাহকে হারিয়ে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়। ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর হামাসের বিরুদ্ধে সমালোচনা বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং তা রাজপথ ও অনলাইনে চলছে। তবে হামাসের প্রতি সমর্থন এখনও রয়েছে, তবে তা কতটা কমেছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের হামলা শুরুর আগে হামাসের বিরোধী কিছু দল ছিল, কিন্তু প্রতিহিংসার ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলতো না।
No comments