জিকা জ্বর: একটি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
জিকা জ্বর (Zika Fever) একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা জিকা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়। এটি মূলত এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ডেঙ্গু জ্বরের মতো, এই রোগের উপসর্গ সাধারণত মৃদু হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই (৬০-৮০%) কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তবে, উপসর্গ দেখা দিলে জ্বর, লাল চোখ, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, মাথাব্যথা এবং ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।
সংক্রমণ ও রোগ নির্ণয়
জিকা ভাইরাস প্রধানত এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ালেও শারীরিক সম্পর্ক, রক্ত সংক্রমণ এবং গর্ভকালীন সংক্রমণ এর মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে। গর্ভবতী মায়ের মাধ্যমে শিশু সংক্রমিত হলে মাইক্রোসেফালি (শিশুর অসম্পূর্ণ মস্তিষ্কের গঠন) হওয়ার ঝুঁকি থাকে। রোগ শনাক্তকরণের জন্য সাধারণত রক্ত, মূত্র, বা লালা পরীক্ষা করা হয়।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
এই রোগ প্রতিরোধের জন্য মশার কামড় এড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে—
- পোকামাকড় প্রতিরোধকারী স্প্রে ব্যবহার করা,
- মশারি টাঙানো,
- শরীর ঢেকে রাখার মতো পোশাক পরা,
- জমে থাকা পানি পরিষ্কার রাখা, কারণ সেখানে মশা বংশবৃদ্ধি করে।
বর্তমানে জিকা ভাইরাসের কোনো কার্যকরী টিকা নেই। চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই, তবে প্যারাসিটামল ব্যবহার করা যেতে পারে।
ইতিহাস ও প্রাদুর্ভাব
জিকা ভাইরাস প্রথম ১৯৪৭ সালে চিহ্নিত হয়। ২০০৭ সালে মাইক্রোনেশিয়াতে প্রথম মহামারি দেখা যায় এবং ২০১৫ সালে ব্রাজিলে এটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৬ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এটিকে গ্লোবাল পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি ঘোষণা করে।
এই রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও মশার প্রজনন বন্ধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
No comments