Header Ads

৩০০০ সালে গ্রিনল্যান্ড অদৃশ্য হয়ে যাবে?


৩০০০ সালে গ্রিনল্যান্ড অদৃশ্য হয়ে যাবে?


গ্রিনল্যান্ডের ভবিষ্যৎ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রমশ অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। এটি মূলত বরফে আচ্ছাদিত একটি অঞ্চল, যা ডেনমার্কের অধীনে স্বায়ত্তশাসিতভাবে পরিচালিত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে, গ্রিনল্যান্ডের বিশাল বরফের চাদর দ্রুত গলে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, বর্তমান গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হারের ফলে ৩০০০ সালের মধ্যে গ্রিনল্যান্ড সম্পূর্ণ বরফমুক্ত হয়ে যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টারের বিজ্ঞানী টুইলা মুন জানিয়েছেন, বরফ গলে সমুদ্রে প্রবেশ করলে তা সমুদ্রের লবণাক্ততা, তাপমাত্রা এবং স্রোতের ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। গ্রিনল্যান্ডে সংরক্ষিত বিশাল পরিমাণ মিঠাপানি সমুদ্রে মিশে গেলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা প্রায় ২৩ ফুট পর্যন্ত বাড়তে পারে, যা উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বরফ গলে যাওয়ায় অঞ্চলটিতে নতুন খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। গ্রিনল্যান্ডে প্রচুর পরিমাণে সিসা, দস্তা ও সোনা রয়েছে, যা অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত মূল্যবান। এই কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন শক্তিধর দেশ এর প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংযুক্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন এটি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। মার্কিন কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, এই অঞ্চলে এক ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের খনিজ সম্পদ রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রিনল্যান্ডের বরফ যদি পুরোপুরি গলে যায়, তাহলে বৈশ্বিক আবহাওয়া ও পরিবেশে নাটকীয় পরিবর্তন আসবে। সূর্যের আলো প্রতিফলিত করার মাধ্যমে পৃথিবীকে শীতল রাখার যে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া রয়েছে, সেটিও বাধাগ্রস্ত হবে। এটি শুধু সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধিই নয়, বরং জলবায়ুর ওপরও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে, যা বিশ্বজুড়ে মানব সভ্যতার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.