সারজিস আলম: নতুন রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু
সাম্প্রতিক সময়ে সারজিস আলম হয়ে উঠেছেন দেশের সবচেয়ে আলোচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে তার সাম্প্রতিক কার্যক্রম সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বিশেষ করে, ২৪ মার্চ তার পঞ্চগড় সফর এবং ব্যান্ড পার্টিসহ বিলাসবহুল গাড়ির বহর নিয়ে শোডাউন রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের ঝড় তুলেছে।
বিলাসবহুল শোডাউন ও বিতর্ক
সারজিস আলম তার নিজ জেলা পঞ্চগড়ে প্রবেশ করেন এক বিশাল বহর নিয়ে। শতাধিক গাড়ি ও মোটরসাইকেল নিয়ে আয়োজিত এই শোডাউন সাধারণ মানুষের মধ্যে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগানো হয়, যেখানে এনসিপি ও সারজিস আলমের পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। স্থানীয়দের অনেকে বিষয়টিকে নতুন ধরনের রাজনৈতিক প্রচারণা বলে মনে করছেন, তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—এই বিপুল অর্থের উৎস কী?
সারজিস আলমের এই ব্যয়বহুল প্রচার প্রচারণা তাকে অন্যান্য ঐতিহাসিক রাজনৈতিক নেতাদের থেকে আলাদা করেছে। বিএনপির সিনিয়র নেতা ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার কিংবা জাগপার শফিউল আলম প্রধানের মতো নেতারা এত বড় আয়োজন ছাড়াই রাজনীতি করতেন। এমনকি কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদের মতো বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সাধারণ গণপরিবহনে সফর করতেন।
অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন
সারজিস আলম এবং তার দল এনসিপি-র অন্যান্য নেতাদের বিপুল পরিমাণ অর্থের উৎস নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়িয়েছে। কিছু অভিযোগ রয়েছে যে, তারা প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব খাটিয়ে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করছেন। সরকারি পদে নিয়োগ ও বদলির ক্ষেত্রে বড় অঙ্কের লেনদেনের গুজবও রয়েছে। এমনকি এনসিপি একটি কর্পোরেট গ্রুপের কাছ থেকে আগামী নির্বাচনের জন্য ১৫০০ কোটি টাকা পাচ্ছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রজীবনে যারা টিউশনি করে জীবন চালাতেন, তারা কীভাবে অল্প সময়ে এত বড় আর্থিক সামর্থ্যের অধিকারী হলেন—এ নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন উঠেছে। সারজিস আলমের মতো তরুণ নেতারা কি সত্যিই আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ খুঁজে পেয়েছেন, নাকি অন্য কোনো রহস্য রয়েছে?
সারজিস আলমের জবাব প্রয়োজন
সারজিস আলমের পঞ্চগড়ে শোডাউন তাকে জাতীয় আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। তবে রাজনৈতিক শুদ্ধাচারের স্বার্থে তার এই বিপুল অর্থের উৎস পরিষ্কার করা জরুরি। সাধারণ জনগণের মনে যে প্রশ্ন উঠেছে, তার স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত, যাতে রাজনৈতিক অঙ্গনে জবাবদিহিতার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যায়।
No comments