আলু চাষিদের দুর্দশা: বাজারে দাম নেই
রংপুর অঞ্চলের আলু চাষিরা এবার চরম সংকটে পড়েছেন। বাজারে আলুর দাম নেই, আর হিমাগার মালিকরা বুকিং বন্ধ করে দেওয়ায় উৎপাদিত আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। এভাবে চলতে থাকলে মাঠের আলু মাঠেই নষ্ট হবে, না হলে গরু-ছাগলকে খাওয়ানো ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
চিলমন এলাকার আলু চাষি গৌরাঙ্গ রায় বলেন, "চার দিন হলো আলু তুলেছি, কিন্তু কেনার কেউ নেই। পাইকারি বাজারে আলু ১০-১১ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, খুচরায় ১৩-১৪ টাকা। অথচ এক কেজি আলু উৎপাদনে ১৯-২০ টাকা খরচ হয়েছে। হিমাগারে রাখতে চাইলে খরচ আরও বেড়ে যায়। সব মিলিয়ে কৃষকের প্রতিকেজি আলুতে ১৮-২০ টাকা লোকসান হচ্ছে।"
গত কয়েক বছর বাজার ভালো থাকায় চাষিরা এবার বেশি জমিতে আলু চাষ করেছেন। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। এবার পাঁচ জেলায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৩৯ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে, যা থেকে প্রায় ২৮ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।
কিন্তু বাজারে চাহিদা কম থাকায় হিমাগারগুলোতে জায়গা ফুরিয়ে গেছে বলে দাবি করছেন মালিকরা। রংপুর জেলার ৩৯টি হিমাগারে ৩ লাখ ৬১ হাজার ৪৩৮ মেট্রিক টন আলুর ধারণক্ষমতা রয়েছে, যা ইতোমধ্যে পূর্ণ হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের আহ্বায়ক আহসানুল আরেফিন তিতু এবং সাধারণ সম্পাদক অজিত দাস হিমাগার মালিকদের এই অবস্থানের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
রংপুর জেলা হিমাগার মালিক সমিতির সভাপতি মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু বলেন, "এবার বেশি আলু উৎপাদন হওয়ায় কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে।"
চাষিরা এখন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন, যেন তারা ন্যায্যমূল্যে আলু বিক্রির সুযোগ পান এবং উৎপাদিত ফসল নষ্ট না হয়।
No comments