Header Ads

অস্থিরতার কারণে এ বছর জাতীয় নির্বাচন চ্যালেঞ্জের মুখে

 

অস্থিরতার কারণে এ বছর জাতীয় নির্বাচন চ্যালেঞ্জের মুখে



বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন আয়োজন এ বছর কঠিন হতে পারে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার এখনো পুরোপুরি জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি, যা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া গণবিক্ষোভের জেরে গত আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়, যার নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি চলতি মাসেই বলেছেন, চলমান অস্থিরতার মধ্যেও ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে শঙ্কা

নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, গেল সাত মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এখনো তা প্রত্যাশিত মাত্রায় পৌঁছায়নি। এনসিপিপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব বলে তিনি মনে করেন না।

নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদ থেকে সরে এসে শিক্ষার্থী ও তরুণদের উদ্যোগে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতৃত্ব নিয়েছেন। তিনি প্রথম রাজনীতিক, যিনি নির্বাচন আয়োজনের সময়সীমা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপির নেতৃত্বে নাহিদ ইসলাম বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক ধারার সূচনা করতে পারেন। কয়েক দশক ধরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিএনপি দেশের রাজনীতিতে আধিপত্য বজায় রেখেছে। তবে বর্তমান রাজনৈতিক সংকট ও আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে, তাদের মতে, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত। তবে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা ও জননিরাপত্তার ঝুঁকির কারণে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

সংকট নিরসনে ‘জুলাই বিপ্লবের প্রোক্লেমেশন’

নাহিদ ইসলাম বলেছেন, নির্বাচন আয়োজনের আগে ‘জুলাই বিপ্লবের প্রোক্লেমেশন’ নামে একটি ঐক্যমত্যমূলক সনদ তৈরি করা জরুরি। অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দল ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে এই সনদ প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে। এতে দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকবে এবং গেল বছরের সহিংসতায় প্রাণ হারানো এক হাজার মানুষের প্রতি সম্মান জানানো হবে।

এই প্রস্তাবের ঘোষণা আসার পর শিক্ষার্থীরা সংবিধান পরিবর্তনের দাবি থেকে সরে এসেছে বলে জানা গেছে। নাহিদ ইসলাম মনে করেন, যদি এক মাসের মধ্যে এ নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছানো যায়, তাহলে দ্রুত নির্বাচন আহ্বান করা সম্ভব হবে। তবে সময় বেশি লাগলে নির্বাচন পিছিয়ে যেতে পারে।

নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এনসিপি

নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, তার দল জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন সম্পদশালী ব্যক্তি দলকে অর্থ সহায়তা দিচ্ছেন। পাশাপাশি, নতুন কার্যালয় চালু ও নির্বাচনের জন্য তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে তারা ‘ক্রাউডফান্ডিং’ শুরু করতে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকব, তবে এটি নির্ভর করবে রাজনৈতিক ঐক্যমত্য ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর।’

No comments

Powered by Blogger.