Header Ads

ওপেনএআইসহ প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোকে কেন সতর্ক করলেন ‘এআইয়ের গডফাদার’

 


বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির দৌড় ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। এই প্রতিযোগিতার ফলে নিরাপত্তা ও নৈতিকতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উপেক্ষিত হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ‘এআইয়ের গডফাদার’ হিসেবে পরিচিত আধুনিক এআই গবেষণার পথিকৃৎ ইয়োশুয়া বেঙ্গিও। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শীর্ষ স্থানে থাকার প্রতিযোগিতা এতটাই বাড়ছে যে এতে নিরাপত্তার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে গেছে।

বিশেষ করে চীনা স্টার্টআপ ডিপসিক-এর উত্থান এবং যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের এআই আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করার বিষয়টি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বেঙ্গিও। তাঁর মতে, প্রতিদ্বন্দ্বিতার চাপ প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নিরাপত্তার মতো মৌলিক বিষয়গুলোকে উপেক্ষা করতে বাধ্য করতে পারে।

দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়োশুয়া বেঙ্গিও বলেন, ‘যদি কোনো প্রতিষ্ঠান জানে যে তারা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অনেক এগিয়ে, তাহলে তারা ধীরগতিতে প্রযুক্তি উন্নয়ন করলেও ঝুঁকিতে পড়বে না। কিন্তু যখন দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী নিজেদের সমান অবস্থানে দেখতে পায়, তখন তারা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যেতে চায়। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার বিষয়টি অনেক সময় পেছনে পড়ে যায়।’

বেঙ্গিওর মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এআই প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীরাও এগিয়ে থাকার লড়াইয়ে নিরাপত্তাকে উপেক্ষা করে কেবল প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের দিকেই নজর দিতে পারে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যে শক্তিশালী এআই মডেল তৈরি করা সম্ভব হলেও তা ভবিষ্যতে গুরুতর ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।

২০২৩ সালে যুক্তরাজ্যের ব্লেচলি পার্কে আয়োজিত এআই নিরাপত্তা সম্মেলনে প্রকাশিত হয় প্রথম পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক এআই নিরাপত্তা প্রতিবেদন। টিউরিং অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ইয়োশুয়া বেঙ্গিওর নেতৃত্বে ৯৬ জন বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে প্রস্তুত করা এ প্রতিবেদনটি যুক্তরাজ্য সরকারের কমিশনে তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে এআই এর অগ্রগতি সাইবার নিরাপত্তা ও জৈব অস্ত্র তৈরির ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে তুলছে। এতে বলা হয় এআই এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এটি জৈবিক অস্ত্র তৈরির বিস্তারিত নির্দেশনাও তৈরি করতে সক্ষম, যা বিশেষজ্ঞদের সক্ষমতাকেও ছাড়িয়ে গেছে। তবে এই প্রযুক্তি সাধারণ মানুষের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, সে বিষয়ে এখনো সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি।

যদিও প্রতিবেদনে এআই এর সম্ভাব্য ঝুঁকির কথা বলা হয়েছে, তবে এর বিপুল সম্ভাবনার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে এআই বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ফেব্রুয়ারিতে প্যারিসে অনুষ্ঠিত হবে পরবর্তী বৈশ্বিক এআই সম্মেলন, যেখানে বিশ্বনেতারা এআই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা ও নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন।

No comments

Powered by Blogger.