Header Ads

১৮ লাখ কোটি টাকার ঋণে দেশকে ডুবিয়ে হাসিনা যেভাবে উন্নয়নের গল্প সাজিয়েছিলেন

 

১৮ লাখ কোটি টাকার ঋণে দেশকে ডুবিয়ে হাসিনা যেভাবে উন্নয়নের গল্প সাজিয়েছিলেন


বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে একটি নির্মোহ বিশ্লেষণ করতে গেলে দেখা যায়, শেখ হাসিনার শাসনামলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে গল্প প্রচার করা হয়েছে, তার পেছনে বিশাল ঋণের বোঝা এবং পুঁজি লুণ্ঠনের এক জটিল চক্র সক্রিয় ছিল।

২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার সময় দেশের মোট অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালের আগস্ট নাগাদ বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। অর্থাৎ, এই সময়কালে ঋণের পরিমাণ প্রায় ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ২০৬ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই ঋণ প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের জিডিপি বাড়িয়ে দেখানোর একটি প্রবণতা গড়ে ওঠে, যা বাস্তবে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পরিবর্তে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বড় ধরনের আর্থিক সংকট তৈরি করে। অতিরিক্ত ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও এসব প্রকল্পে প্রকৃত ব্যয়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে দুর্নীতি ও লুটপাটের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

বিশেষত, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত, ভৌত অবকাঠামো এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার করে মোট ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে।

এছাড়া, অর্থনৈতিক সূচকগুলো নিয়ে অতিরঞ্জিত তথ্য উপস্থাপন এবং পরিসংখ্যানের বিকৃতি ঘটিয়ে সরকারের সাফল্য দেখানোর প্রবণতা ছিল লক্ষণীয়। জিডিপির আকার, রপ্তানি আয়, মূল্যস্ফীতি এবং দারিদ্র্যের হারকে কৃত্রিমভাবে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

শেখ হাসিনার শাসনামলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছিল, তা বাস্তবে ছিল ঋণের সাগরে জাতিকে নিমজ্জিত করে একটি মিথ্যা সমৃদ্ধির গল্প তৈরির প্রচেষ্টা। বর্তমান সরকার এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করলেও বিপুল ঋণের বোঝা এবং পুঁজি পাচারের ফলে দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার একটি দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।

No comments

Powered by Blogger.